অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন বাংলাদেশের পিরোজপুরের কৃষকরা। বহুকালের পুরোনো পদ্ধতি মেনে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাচ্ছেন তারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স পরিবেশিত সচিত্র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিরোজপুর জেলার একজন কৃষিজীবী বর্ষাকালে পানিতে ভাসমান খামারে সেচের কাজ করছেন। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অনেক কৃষকই ফসলের চারা রোপণ করেন। বর্ষাকালে শুষ্ক জমিতে কচুরিপানার মতো জলজ উদ্ভিদ থেকে তৈরি ভাসমান ভেলায় সবজি চাষ করেন।
ভাসমান খামারগুলো পিরোজপুর জেলার ১৫৭ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। পাঁচ বছর আগে এমন জমি ছিল মাত্র ৮০ হেক্টর। ২০০ বছরের পুরোনো পদ্ধতি ব্যবহার করে ফল পাচ্ছেন কৃষকরা।
বরিশালে ভাসমান বেডে বিষমুক্ত সবজি চাষ এনে দিয়েছে সমৃদ্ধি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এতদিন জলাবদ্ধ যে জমি ছিল প্রান্তিক কৃষকের গলার কাঁটা, তা বর্তমানে নতুন করে দেখাচ্ছে স্বপ্ন। মাটি ছাড়া ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি ও মসলার ব্যাপক উৎপাদনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ভীড় করছেন আগ্রহী প্রান্তিক কৃষকরা।
স্থানীয়রা জলাবদ্ধ এসব জমিতে কচুরিপানার বেড তৈরি করে বিভিন্ন জাতের সবজির চারা উৎপাদন করেন। এইসব ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ করতে সাম্প্রতিক বর্তমান সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প হাতে নেয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তত্বাবধানে এই অঞ্চলের বিভিন্ন জলাশয়ে ভাসমান বেড তৈরি করে পরীক্ষামূলকভাবে বিষমুক্ত লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শসা, টমোটেসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করছেন কৃষকরা। এসব ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ সাফল্যও পেয়েছেন একাধিক প্রান্তিক কৃষক।
মাঠ পর্যায়ে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুতপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্পের আওতায় তিন জেলার একাধিক উপজেলায় ভাসমান বেডে বিভিন্ন জাতের সবজি ও মসলা চাষ করা হয়েছে। জেলার উজিরপুর উপজেলার সাতলার নয়াকান্দি, শিবপুর, রাজাপুর, উত্তর সাতলা, পটিবাড়ী গ্রামের প্রান্তিক কৃষকেরা ভাসমান সবজি চাষে ইতিমধ্যে সমৃদ্ধি এনেছে
এ বিষয়ে নগরীর স্টিমার ঘাট (সিটি মার্কেট)-এর পাইকারী সবজি বিক্রেতা সোহরাব আলী বলেন, বরিশাল সদর, গৌরনদী, উজিরপুর,বানরীপাড়া, আগৈলঝাড়া, বাকেরগঞ্জ ও আশপাশের পাইকারি ব্যবসায়ীরা আগে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সবজি আনতেন। বর্তমানে শীত মৌসুমে উজিরপুরের গুঠিয়া, জল্লা, বামরাইল, হারতায় উৎপাদিত সবজি দিয়ে চাহিদা পূরণ করা হয়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে একমাত্র সাতলার ভাসমান সবজিই ভরসা।
Leave a Reply